বিশেষ প্রতিবেদক :

আমাদের সুন্দর সাজানো সংসার ছিলো। বাবা-মা আর আমরা ৫ ভাই বোন মিলে সুন্দর ভাবে কাটছিলো আমাদের সংসার। বাবা সারা দিন ব্যবসার কাজে থাকলেও আমরা ৫ ভাই বোনের সাথে খাওয়ার জন্য তিনি প্রতি বেলায় ঘরে আসতেন। পরিবারের সবার সাথে বসে খাবার খেতেন। রাতের বেলা বাসায় এসে আমাদের প্রত্যেকের সাথে আড্ডা দিতেন। আর ছুটির দিনে বাবা-মার সাথে ঘুরতে যাওয়া ছিলো ৫ ভাই বোনের স্পেশাল আনন্দ। হঠাৎ আমাদের সুখের সংসারে নেমে এলো রাজ্যের অভিশাপ। জীবন আরা নামের এক নারীর কারনে মাটিতে মিশে যেতে লাগলো সুখি পরিবার। হুট করে কোথা থেকে এসে আমাদের পরিবারটিকে তছনছ করে দিলো। জীবন আরার বিচার আল্লাহ করবে। আল্লাহ তুমি জীবন আরাকে কঠিন শাস্তি দাও বলে চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে উঠছে কক্সরবাজার সরকারী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী এ্যানি।

এ্যানি হলো বর্তমান সময়ে আলোচিত ইয়াবা ব্যাবসায়ী জীবন আরার ভয়াল থাবার আরেক ভূক্তভোগী। এ্যানির বাবা বাংলাবাজারের আলী আহম্মদ কোম্পানি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তাকে কৌশলে ব্লেক মেইল করে বিয়ে করে মাদক সম্রাজ্ঞী জীবন আরা।

পিতার সমবয়সী আলী আহম্মদ কোম্পানীর মত এক বয়স্ক পুরুষকে জীবন আরার মতো কমবয়সী নারী কেন বিয়ে করেছে তা ছিলো সবার প্রশ্ন। মূলত লিংক রোড এলাকাটিতে ইয়াবা ট্রান্জিটের নিরাপদ স্থান বিবেচনা করেই ঐ এলাকার বিত্তবান আলী আহম্মদ কোম্পানিকে টার্গেট করেই বিয়ের ফাঁদ পাতে জীবন আরা। আলী আহম্মদ কোম্পানির বিল্ডিংএ জীবন বিউটি পার্লার নামের একটি পার্লার খুলে কৌশলে বাড়ির মালিককে প্রেমের ফাদে ফেলে ব্লেকমেইল করে বিয়ে করে জীবন আরা।
জীবন আরাকে বিয়ে করে নিজের প্রথম ঘরে স্ত্রী ও ৫ সন্তানের সুখের সংসারের প্রতি অবেহেলা শুরু করে আলী আহম্মদ কোং। নতুন স্ত্রীকে নিয়ে লিংক রোডে আলেদা ভাবে বসবাস শুরু করেন তিনি।

স্বামীর ২য় বিয়ে ও সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়ে আলী আহম্মদের প্রথম স্ত্রী শাহিনা আকতার। এক সময় শাহিনার হার্ট এটাক করে। শাহিনার চিকিৎসার জন্য আলী আহম্মদ কোং ঘনঘন ভারতে যাওয়া আসার সুযোগে ইয়াবার জমজমাট ব্যবসা শুরু করে জীবন আরা।
স্ত্রীর চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আলী কোং জানতে পারেন জীবন আরার ইয়াবা ব্যবসার কথা। এর পর থেকে আলী কোং জীবন আরাকে এড়িয়ে চলতে থাকে। এই সুযোগে আরো বেপরোয়া হয়ে পড়ে জীবন আরা। তার বিউটি পার্লারকে বানিয়ে ফেলে ইয়াবার গোডাউন।

গত ২ মার্চ একটি দাওয়াতের কথা বলে আলী আহম্মদ কোম্পানিকে বাসায় ডেকে নিয়ে যায় তার ২য় স্ত্রী জীবন আরা। ঐ রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে জীবন আরার বাসা থেকে ইয়াবা সহ তাদের আটক করে নিয়ে আসে সদর থানা পুলিশ।

আলী কোম্পানির মেয়ে এ্যানি জানিয়েছেন, জীবন আরা ইয়াবা ব্যবসায়ী হলেও তার বাবা ঐ ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। তবে জীবন আরার পাপের বোঝা তার বাবাকে টানতে হচ্ছে। জীবন আরার কারনে তার নিরীহ বাবাকেও ইয়াবা ব্যাবসায়ী হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এতে করে সামাজিক ভাবে তাদের অসুবিধা হচ্ছে। এই ঘটনার পর থেকেই তার ৫ ভাইবোন ও মা লজ্জায় বাসা থেকে বের হতে পারছেনা।

উম্মে সালমা এ্যানি তাদের সুন্দর পরিবার ধ্বংস ও নিরীহ বাবা জীবন আরার কারনে আজ ইয়াবা ব্যবসায়ী তকমা লাগানোর বিচার আল্লাহর কাছে দেন। আল্লাহ জীবন আরার বিচার করবে বলে জানায় এ্যানি সহ তারা ৫ ভাই বোন।